প্রকাশিত: Sat, Dec 10, 2022 4:57 PM
আপডেট: Wed, Apr 30, 2025 4:27 AM

গ্রামীণ ব্যাংকের ঋণ নিয়ে স্বাবলম্বী হয়েছে ৪১ হাজার ৩৮৩ ভিক্ষুক: চেয়ারম্যান

এম এম লিংকন: ভিক্ষুকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে ভিক্ষুকদের ঋণ কর্মসূচি নিয়ে কাজ করছে গ্রামীণ ব্যাংক। এ পর্যন্ত ৮৩ হাজার ৩১৪ জন সদস্যকে ( ভিক্ষুক) ১৮ কোটি ৬৭ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করেছে ব্যাংকটি। এ ঋণ পেয়ে ক্ষুদ্র ব্যবসায় জড়িত হয়ে ৪১ হাজার ৩৮৩ জন ত্যাগ করেছে ভিক্ষাবৃত্তি। গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ কে এম সাইফুল মজিদ একান্ত সাক্ষাতকারে আমাদের নতুন সময়কে এ কথা জানান। 

অধ্যাপক এ কে এম সাইফুল মজিদ বলেন, সংগ্রামী সদস্য (ভিক্ষুক) ঋণ কর্মসূচির আওতায় আরো সদস্য সংগ্রহের কার্যক্রম চলছে আমাদের। দেশের প্রতিটি জেলা- উপজেলাকে ভিক্ষুকমুক্ত করার লক্ষ আমাদের। 

জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিঁ মোকাবেলায় গ্রামীণ ব্যাংকের ভূমিকা সম্পর্কে তিনি বলেন, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় চলতি বছরের আক্টোবর পর্যন্ত ১১ কোটি ৬২ লাখ ৩৬ হাজার ৫৫১ টি ফলজ চারা রোপন করেছে ব্যাংকটির সদস্যরা। এতে করে সদস্যদের পুষ্টির চাহিদা মেটাবে এবং ভবিষ্যতে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে তারা। আমাদের এক কোটি দুই লক্ষ সদস্যকেই বিভিন্ন ফলজ গাছের চারা লাগানোর জন্য উব্ধুদ্ধ করা হয়েছে। অন্ততপক্ষে ২০ কোটি গাছ লাগানোর লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করেছি আমরা। 

দেশের শিক্ষা প্রসারে গ্রামীণ ব্যাংকের অবদান প্রসঙ্গে চেয়ারম্যান বলেন, এই পর্যন্ত ৫৪ হাজার ৮০৫ জন শিক্ষার্থীকে মোট ৩৯৮ কোটি ৫১ লাখ টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে। উচ্চ শিক্ষায় ৬ বছরের জন্য ঋণ দেওয়া হয়। এই ৬ বছর ঋণের টাকার কোন সুদ নেওয়া হয় না। তারা যখন চাকরী পায়, তখন থেকে তাদের কাছে শতকরা ৫ ভাগ সার্ভিস চার্জে টাকা ফেরত নেওয়া হয়। তবে এই ঋণরে কোন ইনস্টলমেন্ট ধরা হয় না। আমরা চাই তারা মূল টাকাটা ফেরত দিলেই হবে।  

তিনি বলেন, এছাড়াও আমাদের সদস্যদের মেধাবী সন্তানদের শিক্ষা বৃত্তি প্রদান করে গ্রামীণ ব্যাংক। এ পর্যন্ত ৬৫ কোটি ৩৯ লাখ টাকা বৃত্তি প্রদান করা হয়েছে। 

শিক্ষিত বেকারদের নবীন উদ্যোক্তা তৈরিতে কাজ করছে গ্রামীণ ব্যাংক, এ কথা উল্লেখ করে চেয়ারম্যান বলেন, ১৮২৭ জনকে নবীন উদ্যোক্তার ঋণ দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ ৬৫ কোটি৩৯ লাখ টাকা। নবীন উদ্যোক্তাদের শুরুতেই কমপক্ষে ৫০ হাজার টাকা ঋণ দেওয়া হচ্ছে। 

এ সব উদ্যোক্তাকে কোন ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন; ইতোমধ্যেই আমরা বেশ কিছু টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার তৈরির বিষয় নিয়ে ভাবছি। এটি বিশেষ করে গ্রামীণ শিক্ষিত নারীদের নিয়ে কাজ করা হবে। ২০২৩ সালের মধ্যেই এর কার্যক্রম শুরু হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। 

নারী উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে গ্রামীণ ব্যাংকের ভূমিকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের সদস্যরা ৫ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা দিয়ে ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু করলেও অনেকের পুঁজি ১ থেকে ৩ কোটি টাকা পর্যন্ত সম্প্রসারিত হয়েছে। এ সব নারী উদ্যোক্তা অনেক বেকারের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিয়েছেন। অজস্র নারী উদ্যোক্তা সৃষ্টি হওয়াতে আর্থসামাজিক উন্নয়নে বিরাট ভূমিকা রাখছে। পরিবারে নারীদের মূল্যায়ন অনেক বেড়ে যাচ্ছে। অনেক নারী সুনামের সঙ্গে স্থানীয় সরকার পরিষদে প্রতিনিধিত্বও করছেন। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব